প্রজাপতি

অনেক আগে তোকে একটা প্রজাপতির খবর
শুনিয়েছিলুম ।
তারপর অনেক দিন তুই বেপাত্তা
আর আমিও প্রজাপতিটাকে নিয়ে হিমসিম ।
দিনরাত তার একটাই বায়না
চাইলেই আমাকে হতে হবে তার উড়বার ফুলের বাগান ।
জলে-জঙ্গলে, কলে-কব্জায়
চব্বিশ প্রহরে আমার ছত্রিশ রকমের কাজ ।
সব ছেড়ে-ছুড়ে কখন ওর চোখের মাপের বাগান হই
হই বল তো?
না হলেই সারা গায়ে ডানা-ঝাপটানির চাবুক

একদিন আয় না,
এলেই দেখতে পাবি গা-ভর্তি লাল পালক, নীল
পালক আরও কত প্রজাপতির রঙ্গ লেগে আছে।10461632_303425626486806_5432093778759353484_n

ফেসবুকনামা

ক্লাস থেকে ফিরে ফেসবুকে লগইন করলাম
একি দেখছি মৌ আজ আমাকে ফেসবুক
থেকে BLOCK করে দিলো।মানে কি আমার
দোষটা কি ।ওকে যে ফোন
দিবো সে নাম্বারটা ও আমার কাছে নেই।অন্য
ID দিয়েও খুঁজে পাচ্ছি না।আমরাতো খুব
ভালো বন্ধু ছিলাম ফেসবুকে।তো BLOCK
দিলো কেন ?
৫মাস ধরে মৌয়ের সাথে পরিচয় ।সারা দিন
অনলাইনে থাকে মেয়েটা ।কি যে করে ও
জানে।আমার সাথে প্রথম প্রথম কথা বলতো না।
একটি STATUS এ কমেন্টস থেকে ঝগড়া তার
পর মিষ্টি সম্পর্ক।
দুজনের সাথে এমন কোন কথা নেই যা শেয়ার
করা হয়নি।ওকে অনলাইনে না দেখলে আমার
কিচ্ছু ভালো লাগে না।এমনও হয়েছে CHAT
করতে করতে সকাল হয়ে গেছে টের পাইনি।
হয়তো মৌ কে ভালোবেসে ফেলেছি কখন তাও
জানি না।ওর ব্যবহারেও তাই মনে হতো।
ওকে আমি বুড়ি বলে ডাকতাম।বুড়িদের মত
আমাকে শাসন করতো ।ঠিক মত
খেতে হবে ক্লাসে যেতে হবে সকালে উঠতে হবে আরো কত
কি
খুব ভালো সময় কাটতো আমাদের।কে আগে নক
করে তা নিয়ে প্রতিযোগিতা হয়ে যেতো বরাবর
ও জিতে যেতো
তবে আমি ইচ্ছে করে হেরে যেতাম।
ওকে জয়ি দেখতে ভালো লাগতো।অন্য কোন
মেয়েকে যদি কমেন্টে কিছু বলতাম আমার দিন
শেষ।আমার সাথে অভিমান করে status
দিতো যখন তখন খুব হাসি পেতো।
আচ্ছা আভিমানী মেয়েদের
কি দেখতে সত্যি খুব সুন্দর লাগে ?
আমার
না মাঝে মাঝে ওকে দেথকে ইচ্ছে করতো।
ওর চোখ দুটো কি মায়াবী হবে
ওর চুল কি ঘন কালো।আচ্ছা
কপালে টিপ পরলে কেমন লাগবে।ও যখন নূপুর
পরে হাটে তখন কেমন শব্দ হয়।লাল
শাড়িতে কেমন লাগবে মৌ কে?
ও কি আমার চেয়ে লম্বা একটা মটকির মত
হবে নাকি আল্লাহ জানে কি আছে কপালে।
ওর কন্ঠ কি কোকিলের মত হবে নাকি কাকের
মত।
থাক যা আছে তাতেইবা আমার কি ওকি আমার
প্রেমিকা নাকি।আজকাল একটু
বেশি বেশি ভাবছি ও অন্য কোন
ছেলেকে কমেন্ট করলে কেমন
জানি একটা পোড়া পোড়া গন্ধ পাই নিজের
ভেতর।
সত্যি কি ভালোবেসে ফেলেছি নাকি বুঝতে পারি না।
গত করেক দিন আমাদের
মাঝে সম্পকে টানাপোড়ন চলছে।আমার একটাই
বায়না কিন্তু ও কিছুতে রাজি হচ্ছে না।
বুজতে পারছি না রাজি হলে কি এমন
ক্ষতি হবে ওর।
নিজেকে লুকিয়ে রাখতে চাইছে কেন।
আমি তো কোন দিন ওর ক্ষতি হয় এমন কিছু
করবো না।আজ আমি ওকে আমার বায়না পূরনের
শেষ সময় বেঁধে দিয়েছিলাম।
যদি তা না করে আমার মরা মুখ দেখবে এমন
একটি দিব্যি দিয়েছিলাম
ও আচ্ছা এতো ক্ষনে বুঝতে পারলাম
আমাকে blockকরার কারন
আজতো মৌয়ের একটি ছবি দেওয়ার
কথা ছিলো আমাকে।
একটা ছবি চাওয়াতে আমার সাথে এমন করতে পারলো নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছে।আমার প্রতি কি ওর একটু টান নেই।ওতো নিজে কতবার কথা দিয়েছে ছবি দিবো আজ না কাল এমন করতে করতে কত ছলনা করেছে আমার সাথে।ওদিন জিদ করাতে কতো গুলো FUNNYছবি দিয়ে তামাশা করেছে আমার সাথে মেজাছটা এতো খারাপ লাগছে
কাকে দোষ দিবে আমি নিজে কে না মৌ কে?
ছবি চাওয়াটা কি আমার অপরাধ ছিলো ?
আমার প্রতি কি একটু টান নেই না পুরোটা ছিলো অভিনয় তবে কি মৌ FAKE ID
আজও খুঁজে চলছি মৌ কে______
সত্য ও কাল্পনিক সংমিশ্রনে লিখিত

নীলার বাড়ি ফেরা

হাসপাতালের বারান্দায় একটি চেয়ারে বসে আছে জয়। বাড়িওয়ালা চাচার ফোন পাওয়া মাত্র ও চলে এসেছে অফিস থেকে।এই লোকটি ওদের জন্য অনেক কিছু করেছে।আজও নীলা কে নিয়ে এসেছে হাসপাতালে। নিজের মেয়ের মত দেখেন নীলা কে আর নীলা ও চাচা চাচা করে জীবন দেয়।কিছু রান্না করলে আগে চাচা কে খাওয়াবে আমাদের ঘরে আজ নতুন অতিথি আসবে নীলার কোল জুড়ে থাকবে ফুটফুটে একটি বাবু।ভাবতেই অন্য রকম লাগছে জয়ের। হঠাত্ একটি অজানা ভয় ওকে গ্রাস করেছে। নীলাকে নিয়ে অনেক ভয় করছে।যদি কিছু হয়ে যায়। কি নিয়ে থাকবে জয়। এই অবস্থাতে ওকে বেশি একটা যত্ন করা হয়নি। টাকা খরচ এর ভয়ে নীলা ডা: এর কাছেও যেতো না। অনেক বলার পর ২/১বার গিয়ে ছিলো ২ বছর ধরে ওদের ছোট্র সংসার শুরু হয়েছে।দুজন মানুষ পরিবার ছেড়ে আজ অনেক দুরে।এ সমাজের নিয়মে ওরা বন্দি হয়নি।বাবার প্রচুর্য ছেড়ে জয়ের হাত ধরে চলে এসেছে যার ফিউচার বলতে কিছু নেই। সামান্য টিউশনি করে একটি মেছে থাকে জয় তখনো কোন চাকরি পায়নি।এ শহরে নিয়ম বড় অদ্ভত জোতার তলা ক্ষয় হয়ে যায় চাকরির পেছনে ছুটতে ছুটতে তবু তার দেখা পাওয়া যায় না। অবশেষে নীলার কথায় বাধ্য হয়ে বিয়ে করতে হয়। এই মেয়েটা ওকে এমন কি পাগল করেছে যার প্রতিটা কথা বাধ্য ছেলের মত মেনে নেয়। নীলা এতোটা মায়াবী যে ঔ মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলা যায় না। আপনি কি জয় সাহেব? নার্সের ডাকে ও বাস্তবে ফিরে আসে।জি আমি কি হয়েছে? এই ঔষধ গুলো নিয়ে আসেন। শ্লিপটা নিয়ে চলে যাচ্ছে র্ফামেসীর দিকে।নীলার আবস্থা কি খুব খারাপ।মনে মনে ভাবছে।কিসব আবল তাবল ভাবছি আমি।কিছু হবে না আমার নীলার। নীলার কত স্বপ্ন এই ছোট্ট সংসার কে ঘিরে।ওর খুব ইচ্ছে একটি ছেলে সন্তানের মা হবে। নীলা একটি পাগলী তা না হলে কি এখনি কেউ ছেলের জন্য স্কুল ড্রেস,খাতা কলম ক্রিকেট ব্যাট কিনে রাখে।ছেলের একটি নামও ঠিক করে রেখেছে*** আমাকে ***মা নামে ডাকতে হবে বাড়িওয়ালা চাচা তো শুরু করে দিয়েছে।পাগলীটা কে নিয়ে যে কি করি ওকে ছাড়া আমার ছোট্ট ঘড়টার অস্তিত্ব কল্পনা করতে পারি না। এই ২ বছর ধরে একসাথে ওরা অভাব থাকলেও দুঃখ ওদের স্পর্শ করতে পারেনি। বাসাটা কে নিজের মত করে সাজিয়েছে হোক ভাড়া বাড়ি তাতে কি? জয় র্ফামেসী থেকে ঔষধ নিয়ে আসছে।O T তে নীলা । এখনো অপারেশন শুরু হয়নি। নীলা অপারেশনের আগে একবার জয়ের সাথে কথা বলতে চাইছে নীলার হাত ধরে বসে আছে জয়।মনে হচ্ছে যুগ যুগ দরে একে অন্যকে দেখেনি নীলার ঐ মায়াবী চেহার দিকে তাকালে জয়ের কথা বলার শক্তি থাকে না।চোখ দিয়ে জল পড়ছে নীলা কথা বলছে আমার কথা গুলো মন দিয়ে শোন “যদি আমার কিছু হয়ে যায় তবে আমার ছেলেটাকে তুমি দেখে রাখবে।কোন দিন ওকে একা করে রাখবে না।নিজের প্রতি খেয়াল রাখবে। বাড়িওয়ালা চাচার প্রতি একটু খেয়াল রেখো।ওনি খুব অসহায় মানুষ।আমার পরিবার থেকে আমার ছেলেকে আলাদা রেখো।ও বড় হলে আমার গল্প ওকে শোনাবে।ওকে একটি সাইকেল কিনে দিও।আর তুমি রাত জেগে আফিসের কাজ করবে না আগে বলিনি তুমি কষ্ট পাবে তাই। আর শোন চাইলে একটি বিয়ে করতে পারো” জয় কিছু বলতে পারলো না নার্স ওক OT থেকে চলে যেতে বললো রোগীর খুব কষ্ট হচ্ছে জয় বাকশক্তিহীন হয়ে চলে গেলো দুচোখ দিয়ে জল ঝড়ছে।শেষ বার কি একটু কথা বলতে পারতো না নীলার সাথে ?নীলার দেওয়া শেষ দাবি গুলো কি জয় পালন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে আচ্ছা শেষ বার হবে কেন নীলা তো অপারেশন শেষে ফিরে আসবে।তখন তো নতুন অতিথীকে নিয়ে শুরু হবে সেই ছোট্ট সংসার O T তে নীলা বাহিরে দাড়িয়ে আছে জয়।প্রানহীন একটি অসহায় মানুষ আজ জয় ।যে নীলার জন্য জীবন দিতে পারে অথচ আজ কিছু করতে পারছে না। আচ্ছা নীলার যদি কিছু হয় তা হলে কি জয় কি করে ফেলবে? তাইতে নীলা ছাড়া কি লাভ বেঁচে থেকে ঐতো সেদিন টাইফয়েড জরে যথন আমি হাসপাতালে তখন নীলা আমাকে নিয়ে কত ভয় পেয়েছিল আমি কথা দিয়েছি “বাঁচতে হয় এক সাথে বাঁচবো মরবো একসাথে” সে কথা কি মিথ্যে হতে পারে

বন্ধু এবং ভালোবাসা

আজ মাঝ রাতে একটা ফোন আসলো HELLO কি রে তুই এত রাতে কি হইছে ।না কিছু না। দোস্ত কি করিস রে তুই,এইতো বসে আছি তোর কি মন খারাপ? না রে ভালো আছি। তবে তুই যে কান্না করছিস কে বলছে আমি কান্না করছি। ও না হলে ভালো আচ্ছা তুই আমার এত খবর রাখিশ কেন ? তুই যে আমার শত্রু তাই কারন এদের থেকে সাবধান থাকতে হয়। হা হা হা কি আমি তর শত্রু? আনেক টা ঔ রকম ই লাগে। যা শয়তান. Hmmm যাব ই তো। তুই কি এখন ও কান্না করছিস. বুঝলি কি করে আমি কান্না করছি? কারন যানি না তবে বুঝতে পারি। হইছে অপনা কে আর বেশি বুঝতে হবে না।এখন ঘুমান যান। যাচ্ছি তবে কেন ফোন করলি সেটা তো বলবি। না এমনি দিলাম। আরে বল দোস্ত আমাকে মাফ করে দিসতো OK দিলাম BUT কেন? তোর সাখে আর কখনো কথা হবে না তাই। ও আচ্ছা তবে তোর মন খারাপ কেন? এ করনে ই দুর গাদি, এ জন্য মন খারাপ করা লাগে। কেন কথা বলবো না সেটা জনতে চাইলি না ? কোন প্রয়োজন দেখি না। ROBIN কথা বলতে না করছে। ও তাই hmmm বলাটাই স্বাভাবিক কারন ও যে তর BF. আসলেই তুই একটা গাদি। কিন্তু আমরা তিন জন ই তো ভালো বন্ধু তবে ও আমাকে এ কাজটা করতে বললো কেন? ঔ আমার ঘুম আসতাছে রে একটু ঘুমাতে দিবি না। শয়তান serious কথাতে ও ফাজলামি হঠাত্ ফোন কেটে যায় (নেটওয়ার্ক প্রবলেম)কেউ ইচ্ছা করে কাটে নি। দুজন মানুষ ই ভুল বুঝলো।দুই প্রান্তে দুটি মানুষ হয়তো কান্না করছে অথচ কেউ টের পাচ্ছে না। এরপর এনেক দিন চলে গেছে কেউ কারো খোঁজ নেয়নি শুভ ওদের পুরনো দিন গুলোর কথা ভাবছে।শুভ ও তমা খুব ভালো বন্ধু কলেজে এসে ওদের পরিচয় হয়।একসাথে কোচিং করতো এভাবে ওদের বন্ধুত্বটা অনেক ঘনিষ্ট হয়ে ওটে।হঠাত্ কেউ এদের দেখলে couple বলতে বাধ্য। তবে ওরা তা মনে করেনি।একজন আর একজনের সাথে কথা না বলে থাকতে পারে না।রোজ ঘুম থেকে ওঠে ফোন ঘুমানোর আগে ফোন। রবিন কোচিং এ নতুন এসেছে।ধনী বাবার একমাত্র সন্তান এবং অনেক মেধাবি ছাত্র তমা ওর কাছ থেকে অবসরে Math এর ব্যাপারে help নিতো সেই সুত্রে পরিচয় এক সময় ওরা ৩জন খুব ঘনিষ্ট বন্ধুতে পরিনত হয়। কেন্টিনে অনেক সময় ওদের দেখা যায় তবে বেশি দেখা যায় ও বাবলা গাছটার নিচে।ইদানিং তমাকে যখন তখন কল ওয়েটিং দেখে শুভ তবে কখনো তার কারন জানতে চায়নি।এখন আর আগের মত শুভ কে গুড মণিং sms ও দেয় না কেমন জানি এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।শুভর খারাপ লাগে কিন্তু তমা কে কিছু বলে না।ও ভাবে কোন অধিকারে বলবে।বন্ধুকে তো আর জোর করা যায় না।যদি শেষে বন্ধত্বটা নষ্ট হয়ে যায়। এমন কি আজকাল তমা শুভকে ফোন না দিয়ে চলে আসে ক্লাসে ওর সাথে বসে না। রবিনের সাখে বেশি দেখা যায়।ওদিন রাহাত বলে বসলো কিরে শুভ তর তমা কে আজ কাল রবিনের সাথে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এ দেখি।শুভর বুকটা মোচর দিয়ে ওঠে।তমা কে ও ফোন দিল। আজ ও তমাকে সব বলে দিবে কতটা ভালোবাসে ওকে। তমা কে আজকাল campus এ দেখা যায় না। রবিনের সাথে সারা দিন ঘুরে বেড়ায়।খুব আনন্দে দিন কেটে যাচ্ছে ওর।হঠাত্ তমার ফোন বেজে উঠে। hello শুভ আমি একটু ব্যাস্ত আমি তোকে পরে ফোন দিচ্ছি বলে ফোন কেটে দিল। শুভ চুপ করে আছে কিছু বলতে পারলো না রাতের ফোনের জন্য প্রহর গুনছে রাতের খাবার খেয়ে শুভ ওর বিছানায় চলে গেছে মোবাইলটা ধরে ও রেখে দিল । মনে মনে ভাবছে তমা আর ফোন দিবে না তাই ও শুয়ে পরলো।ভেবে ছিল আজ মনে না বলা কথা গুলো এক এক করে বলবে।ওর জন্য কতটা ভালবাসা জমা পড়ছে এই হ্রদয়ের মাঝে ।তমা কি আমাকে ফিরিয়ে দিবে।দিতে ও পারে কারন ওরা অনেক ধনী আমার সাথে যায় না।এ সমাজ তা মেনে নিবে না।এসব কথা গুলো আজ অনেক বেশি ভাবছে ছেলেটা। আমি গ্রামের ছেলে বাবা কত কষ্ট করে আমার লেখাপড়ার খরচ চালায় আরো কত কি আজ ওর মাথায় ঘুড়ছে।না না হয়তো তমাও আমাকে ভালোবাসে।ও আমার জন্য অনেক করেছে। কেন করেছে আমাকে ভালবাসে বলেইতো।সব কথা কি বলতে হয় ও তো বুঝবে আমি কতটা ভালোবাসি ওকে। ঠিক মাঝ রাতে তমা ফোন দিল। কিরে ঘুমিয়ে গিয়েছিস? না আমি ঘুমাইনি পড়ছিলাম। আচ্ছা তুই সকালে ফোন দিয়েছিলি? কি জানি সিরিয়াস কথা আছে বল। শুভ কথা বলতে পারছে না। উল্টো তমা বলছে আচ্ছা শুভ তোকে আজ একটা কথা বলি রবিন কে তর কেমন লাগে? হুম ভালো কেন কি হয়েছে? রবিন কে আমি ভালোবাসি ও আমাকে অনেক ভালোবাসে।জানিস না আজকাল আমারা সারাদিন ঘুরেবেড়াই আরো কত্ত মজা করি তোকে বলে বোঝাতে পারবো না। আমি অনেক HAPPY। শুভর বুকটা কেঁপে উঠলো গলাটা কে যেনো চেপে ধরে আছে কোন কথা আসছে না।কে যেন বুকে পাথড় বসিয়ে দিচ্ছে।আর কি বলবে ও কিরে চুপ হয়ে গেলি কেন।তুই খুশি না। বলতো আমাদের জুটিকে কেমন লাগবে? হুম তোদের খুব সুন্দর মানিয়েছে। কথাটা বলতে ওর গলা কাঁপছে হয়তো চোখের কোনে জল জমে আছে।কিন্তু তমা কি বুঝতে পারছে।হয়তো না। এগুলো বুঝার মত এখন ওর সময় নেই।তমার চোখে এখন রঙ্গিন স্বপ্ন।শুভ কখনো পারবে না ঔ স্বপ্ন ভেঙ্গে দিতে। এই শোন রবিন ফোন দিয়েছে এখন রাখি। তমা ফোন কেটে দিল। এখন মাঝ রাত শুভর হয়তো খুব কষ্ট হচ্ছে।কিন্তু তার খবর নেয়ার কেউ নেই।একদিন এই তমা ও বুঝতে পারতো শুভর অব্যক্ত মনের যত কথা। তবে আজ কেন বুঝতে পারে না? কল্পনা থেকে থেকে শুভ বাস্তবে ফিরে আসে।নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার জন্য ও প্রস্তুত।আজ তমা ওকে বলে দিয়েছে আর কথা হবে না।তবে গাদিটা কি কান্না করছিল নাকি ও ভাবছে। না ও কান্না করবে কেন।ওরতো এখন সুখে থাকার দিন।আমার সাথে কথা না বলে যদি ওর ভালো হয় তবে তাতে আমি খুঁশি।শুভ ভোরের জন্য অপেহ্মা করছে।এই শহরে হয়তো আজই ওর শেষ রাত।শুভ ভেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশটা কে দেখছে।এই শহরের আকাশটা কে আজ ওর অচেনা লাগছে।আধো আধো চাঁদটা শেষ আকাশে চলে গেছে।তারা গুলো আজ একা একা লাগছে।পরিবেশটা কেমন অপরিচিত লাগছে।একটু পরে চারিদিকে আলো ছড়িয়ে পরবে।সবাই ব্যস্ত হয়ে পরবে।ঘরের তালাটা আর একবার দেখে নিল শুভ সাথে একটা চিঠি রেখে গেছে ওর রুমমেট করিরের জন্য।একা একা হেটে যাচ্ছে ও।একটি রিক্সা নিয়ে কমলাপুর চলে গেল।ট্রেন এর জন্য বেশি সময় অপেহ্মা করতে হয়নি।এই শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে ও হয়তো আর কখনো ফিরে আসবে না এই ছেলেটি।কেন ফিরে আসবে কার জন্যে ফিরবে? এখানে থাকলে অনেক কষ্ট পেতে হবে তাই চলে গেল কাউকে কিছু না বলে। দেখতে দেখতে কেটে গেলো ১৪ বছর তমার সাখে কোন যোগাযোগ নেই শুভর।শুভ এখন কাশিপুর প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিহ্মক। বাবা মারা যাবার পর সকল দায়িত্ব কাঁদে নিয়েছে।ছাত্র/ ছাত্রীদের কাছে ও খুব প্রিয়।ইদানিং স্কুলের সবাই ব্যাস্ত কয়েক দিনের মধ্যে শহর থেকে পরির্দশক আসবে।স্কুল ছুটির পরে শুভ বাড়ি ফিরে যাচ্ছে ওর কাঁদে একটি ব্যাগ এখন চশমাও পরে চোখে কম দেখে।হঠাত্ রাস্তার পাশে একটি বাবলা গাছ দেখতে পেয়ে ও থমকে দাঁড়ায়।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সেদিকে।কলেজ জীবনের কথা গুলো ওর মনে পড়ে যায়।প্রতিদিন তমার সাথে বসে আড্ডা দিতো সারা দিন ঘুরে কাটিয়ে দিত।এক এক করে আজ সব মনে পড়ছে ওর।অনেক দিন হল তমাকে দেখে না।যার সাথে কথা না হলে ওর ঘুম হতো না।আজ ১৪টি বছর তাকে ছাড়া কাটিয়ে দিল।তমার কথা আজ বড্ড বেশি মনে পড়ছে।ওকে একটু ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করছে।আচ্ছা এখন তমা দেখতে কেমন ও কি চশমা পড়ে? চশমা পড়লে ওকে দারুন লাগতো কিন্তু ও পড়তো না অনেক বলেছি কাজ হয়নি।আচ্ছা ওর কি চুল পেকে গেছে আমার মত? আমাকে কি সত্যি ভুলে গেছে তমা।ওকি আমাকে খোঁজেছিল? শুভ বাস্তবে ফিরে আসে।ভাবছে তমা এখন রবিনের কাছে অনেক সুখে আছে।ও রবিন কে ভালবাসে।এই মেয়েটা খুব গোছালো নিশ্চই নিজের সংসার টাকে গুছিয়ে নিয়েছে।তমা কি মা হয়েছে ওরতো ইচ্ছে ছিল একটি মেয়ে সন্তানের মা হবে।আচ্ছা ওর মেয়ে আমাকে কি মামা বলে ডাকবে? পেছন থেকে রনি এসে শুভ কে ডাকলো বাবা বাবা এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন বাড়ি যাবে না? রনির হাত ধরে শুভ বাড়ি চলে যায়। রনি কে নিয়ে শুভর ছোট্ট সুখের সংসার। রাতের খাবার খেয়ে দুজন ঘুমিয়ে যায়। কাল শহর থেকে বড় অফিসার আসবে স্কুল পরির্দশন করতে। এখন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে যায় তমা ১৪ বছর আগের অভ্যাস নেই দেরি করে ঘুম থেকে উঠার।এখন ওর দায়িত্ব অনেক মাকে নিয়ে ছোট্র সংসার।অফিসের জন্য তেরী হচ্ছে ও এখন শিহ্মা বিভাগের উচ্চপথস্থ কর্মকর্তা।স্কুল পরির্দশনে আজ ঢাকার বাইরে যেতে হবে।নাস্তা করে ও মা কে বলে চলে যায়। ঢাকা থেকে অনেক দূরের পথ কাশিপুর প্রাইমারি স্কুল। ওদের গাড়িটি এখন গ্রামের পথ দিয়ে যাচ্ছে।এই পরিবেশটা ওর মন কেড়ে নিচ্ছে ইচ্ছে করছে গাড়ি থেকে নেমে যেতে তবে পারছে না। তমার পূরনো দিনের কথা মনে পড়ছে।শুভ মাঝে মাঝে ওকে নিয়ে যেতো শহর থেকে দুরে এমনি কোন খোলা পরিবেশে।হঠাত্ শুভর কথা মনে হতেই ওর বুকটা কেঁপে উঠে।শুভ নামের ওই স্বার্থপরটা কে ও ভুলে গেছে।যে ওর জীবন থেকে চলে গেছে কিছু না বলে তার কথা কেন ও মনে রাখবে। শুভ কেন চলে গেলো তার কারন আজও অজানা রয়ে গেছে।শুভর চলে যাবার খবরটা শুভর এক রুমমেট তমা কে দিয়েছিল।পুরো শহর জুরে খুজেছে তমা শুভ কে।কোথাও পায়নি ওকে।সেদিন তমা অনেক কান্না করেছিল।শুভর অনুপস্থিতি ও কে অনেক আঘাত করেছে আজও করে হয়তো। কি ভাবে পারলো ও তমাকে ভুলে থাকতে।সেদিন তো শুভ কে তমার খুব প্রয়োজন ছিল।তমা খুব একা হয়ে গিয়েছে। রবিন ওর সাথে প্রতারনা করেছে।তমাকে রবিন ভালোবাসেনি ওর সাথে ছলনা করেছে।রবিন উচ্চবিত্ত পরিবারের বলে যা ইচ্ছা তাই করতে পারলো।তমার সরল মনটা নিয়ে ও ছিনিমিনি খেলেছে।তমার মন কে নয় ওর রুপের দিকে রবিনের লোভ ছিল।নিজের কার্য হাসিল করে রবিন চলে গেছে।অথচ এর প্রতিবাদ করতে পারলো না ওর পাশে কেউ ছিলনা। শুভর প্রতি ওর বড্ড অভিমান রয়েছে।গাদাটা আমাকে ভালোসাতো আথচ কখনো তা বলতে পারেনি।যদি একবার বলতো তা হলে হয়তো আমার জীবনটা আরো সুন্দর হতো।এমন কিছু হতো না।ওকে তো আমারও ভালো লাগতো কিন্তু গাদাটা বুঝতে পারলো না।ও পাশে থাকলো তো আমার এ পরিনতি হতো না। গাড়িটি হঠাত্‍ একটি ঝাঁকুনি খায়।তমা বাস্তবে ফিরে আসে।চোখের কোনায় জমে থাকা জলটুকু আঁচল দিয়ে মুছে নেয় ও।স্কুলের মাঠের সামনে ওদের গাড়িটি থামলো শুভ ক্লাস নিচ্ছিলো পরিদর্শক এসেছে জানতে পেরে ও চলে আসে।শুভর হাতে স্কুলের পিয়ন একটি ফুলের তোরা ধরিয়ে দিল।মেডাম কে বরন করে নিতে।শুভ ফুল নিয়ে দাড়িয়ে আছে।দুজন মানুষ আজ এতো কাছাকাছি আথচ কেউ কাউকে দেখছে না।তমা গাড়ি থেকে নেমে আসছে।ওর মাথার কাপড়টা ঠিক করে নিলো।শুভর কাছ থেকে ফুল নিয়ে ও সামনে চলে যাচ্ছে।তবে মনে হচ্ছে তমার পা সামনে এগুচ্ছে না।তমা কি শুভকে চিনতে পেরেছে….. শুভ কে যদি চিনে থাকে তমা তাহলে ও ঘোমটা দিয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখলো কেন।একবার ও কি শুভকে নিজের পরিচয় দিতে পারতো না।কেন বলছে না আমি তোর তমা। এখন শুভর ভেতরটা কেমন যেন লাগছে।যথন ও তমার সাথে বাবলা গাছের নিচে পাশাপাশি বসে থাকতো আজ ঠিক সেই অনুভুতিটা লাগছে।কেন? একসাথে মিটিং হচ্ছে আথচ তমাকে দেখতে পারছে না শুভ।তমা যতটা সম্ভব নিজেকে লুকিয়ে রাখছে আর শুভর দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে।শুভ বুড়ো হয়ে যাচ্ছে চুল পেঁকে যাচ্ছে চশমা নিয়েছে।এই ফ্রেমের চশমা তমা ওকে পছন্দ করে দিয়েছে।গাদাটা এই গরমে কাঁদে একটা শাল রেখেছে কেন? চুলে কি একটু কলপ দিতে পারে না।এখনো ঠিক অগোছালো রয়ে গেলো। তমার এক কলিগ বলছে মেডাম মিটিং এখানে শেষ। তমা এতোটা সময় কল্পনায় ছিল। একটু পর তমা চলে যাবে। দুজন মানুষ আজ এতো কাছে তবু দেখা হচ্চে না।আজও একে অন্যের প্রতি অঘাত ভালোবাসা রয়েছে।অপ্রকাশিত রয়ে গেল তমা সাহস করে ওর কলিগ কে বলছে ও প্রধান শিহ্মকের সাথে একটু আলাদা কথা বলবে।শুভ ও তমা এখন সামনা সামনি বসে আছে।তমা ওর ঘোমটা সরিয়ে দিল।শুম এক দূষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চিন্তে কষ্ট হচ্ছে তবুও চিনতে পারলো। কাঁপা কাপাঁ গলায় বলছে। আপনি তমা? হুমম আমি তমা! চিনতে কষ্ট হচ্ছে তাই না আমি তো বুড়ি হয়ে গেছি ? ভালো আছো? হুম তুমি আমিও গ্রামে এসে মাস্টার হলে যে? বাবার হাতে গড়া স্কুল মারা যাবার আগে আমাকে দায়িত্ব দিয়ে গেলো।তা পালন করছি। …… ……….. এমন সময় রনি এসে শুভ কে বলছে বাবা দাদি তোমার খাবার পাঠিয়েছে। তোমার ছেলে? তাহলে বিয়ে করেছো। রনিকে তমা বুকে টেনে নেয়।তমার খুব কষ্ট হচ্ছে। তোমার বউ কেমন আছে? সবাই ভালো আছে। আর তোমার পরিবার ? তমার বুক কেঁপে উঠে। ভেজা চোখে উওর দেয় ভালো। তমা আর এক মূহুর্ত থাকতে চাইছে না।বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে। তমা চলে যাবার পর শুভর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।এই প্রথম তমাকে মিথ্যা বলেছে ও।রনি শুভর ছেলে না।রনি কে কুড়িয়ে পেয়েছে ৩বছর বয়সে এখন রনি শুভকে বাবা বলে ডাকে। স্কুলের পিয়ন এতোহ্মন সব শুনেছে তমা সম্পর্কে ও সব জানে।স্যার মেডাম কে মিথ্যা বললেন কেন?অপনি তো বিয়ে করেন নি। তমা এখন রবিনের কাছে সুখে আছে।তাই আমার কথা ওকে জানালাম না।হয়তো ও মনে কষ্ট পাবে। তমা চলে যাচ্ছে।আর ভাবছে শুভ ঠিক কাজ করেছে।ও সুখে থাক রবিনের কথা জানতে পারলে গাদাটা কষ্ট পাবে।তাছাড়া ওর এখন সংসার আছে সন্তান আছে কি লাভ আমার কথা বলে।শুভ তাই ভালো থাক……….. তমা চলে যাচ্ছে এ জীবনে হয়তো শুভ ওকে আর দেখতে পাবে না।একটি বার বলতে পারলো না তমাকে আজও কতটা ভালোবাসে।এ জনের চাওয়া গুলো নিরবে ঝড়ে যায়।কিছু মানুষ না পাওয়া কে পাওয়া হিসেবে মেনে নেয় শুভ তাদের দলে।তমা ভালো আছে যেন ওর ভালো লাগে।হয়তো ঐ দিন কষ্ট পাবেন যেদিন তমা দুঃখে থাকবে। পিওন করিম মিয়া শুভর কাছের একজন মানুষ।সে বুঝতে পারছে শুভর অনেক কষ্ট হচ্ছে তবে মনের কথা চেপে রাখলো কেন একটিবার জানানো দরকার ছিল তমা কে যাকে ভালোবাসে বলে আজও বিয়ে করেনি।করিম বসে থাকার লোক নয় আজ একটা কিছু সে করে ছাড়বে। তমা গাড়ি উঠে যাচ্ছে।উঠার আগে চারপাশটা ভালো করে তাকিয়ে দেখছে।মাঠে রনি খেলা করছে।করিম মিয়া ছুটে যাচ্ছে তমার দিকে ঝড়ের বেগে। আপনি তো শুভ স্যারের বান্ধবি তমা? তমা কিছুটা চমকে গেলো এই লোক জানলো কি করে। হ্যা আমি তমা।কিছু বলবেন? হ্যা আপনাকে অনেক কিছু বলার আছে। তমাকে সব কিছু খুলে বলে করিম মিয়া।তমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।কি করবে বুঝতে পারছে না।তবু এক দৌড় দিয়ে ছুটে যাচ্ছে শুভ কাছে।আজ হয়তো না গেলে সারা জীবনে যাওয়া হবে না।আশপাশের সবাই তাকিয়ে আছে অভাক হয়ে।ছুটে গিয়ে তমা শুভ কে ধরে কান্না করছে।শুভ কিছু বলতে পারছে না।

বন্ধু এবং ভালোবাসা

আজ মাঝ রাতে একটা ফোন আসলো HELLO কি রে তুই এত রাতে কি হইছে ।না কিছু না। দোস্ত কি করিস রে তুই,এইতো বসে আছি তোর কি মন খারাপ? না রে ভালো আছি। তবে তুই যে কান্না করছিস কে বলছে আমি কান্না করছি। ও না হলে ভালো আচ্ছা তুই আমার এত খবর রাখিশ কেন ? তুই যে আমার শত্রু তাই কারন এদের থেকে সাবধান থাকতে হয়। হা হা হা কি আমি তর শত্রু? আনেক টা ঔ রকম ই লাগে। যা শয়তান. Hmmm যাব ই তো। তুই কি এখন ও কান্না করছিস. বুঝলি কি করে আমি কান্না করছি? কারন যানি না তবে বুঝতে পারি। হইছে অপনা কে আর বেশি বুঝতে হবে না।এখন ঘুমান যান। যাচ্ছি তবে কেন ফোন করলি সেটা তো বলবি। না এমনি দিলাম। আরে বল দোস্ত আমাকে মাফ করে দিসতো OK দিলাম BUT কেন? তোর সাখে আর কখনো কথা হবে না তাই। ও আচ্ছা তবে তোর মন খারাপ কেন? এ করনে ই দুর গাদি, এ জন্য মন খারাপ করা লাগে। কেন কথা বলবো না সেটা জনতে চাইলি না ? কোন প্রয়োজন দেখি না। ROBIN কথা বলতে না করছে। ও তাই hmmm বলাটাই স্বাভাবিক কারন ও যে তর BF. আসলেই তুই একটা গাদি। কিন্তু আমরা তিন জন ই তো ভালো বন্ধু তবে ও আমাকে এ কাজটা করতে বললো কেন? ঔ আমার ঘুম আসতাছে রে একটু ঘুমাতে দিবি না। শয়তান serious কথাতে ও ফাজলামি হঠাত্ ফোন কেটে যায় (নেটওয়ার্ক প্রবলেম)কেউ ইচ্ছা করে কাটে নি। দুজন মানুষ ই ভুল বুঝলো।দুই প্রান্তে দুটি মানুষ হয়তো কান্না করছে অথচ কেউ টের পাচ্ছে না। এরপর এনেক দিন চলে গেছে কেউ কারো খোঁজ নেয়নি শুভ ওদের পুরনো দিন গুলোর কথা ভাবছে।শুভ ও তমা খুব ভালো বন্ধু কলেজে এসে ওদের পরিচয় হয়।একসাথে কোচিং করতো এভাবে ওদের বন্ধুত্বটা অনেক ঘনিষ্ট হয়ে ওটে।হঠাত্ কেউ এদের দেখলে couple বলতে বাধ্য। তবে ওরা তা মনে করেনি।একজন আর একজনের সাথে কথা না বলে থাকতে পারে না।রোজ ঘুম থেকে ওঠে ফোন ঘুমানোর আগে ফোন। রবিন কোচিং এ নতুন এসেছে।ধনী বাবার একমাত্র সন্তান এবং অনেক মেধাবি ছাত্র তমা ওর কাছ থেকে অবসরে Math এর ব্যাপারে help নিতো সেই সুত্রে পরিচয় এক সময় ওরা ৩জন খুব ঘনিষ্ট বন্ধুতে পরিনত হয়। কেন্টিনে অনেক সময় ওদের দেখা যায় তবে বেশি দেখা যায় ও বাবলা গাছটার নিচে।ইদানিং তমাকে যখন তখন কল ওয়েটিং দেখে শুভ তবে কখনো তার কারন জানতে চায়নি।এখন আর আগের মত শুভ কে গুড মণিং sms ও দেয় না কেমন জানি এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।শুভর খারাপ লাগে কিন্তু তমা কে কিছু বলে না।ও ভাবে কোন অধিকারে বলবে।বন্ধুকে তো আর জোর করা যায় না।যদি শেষে বন্ধত্বটা নষ্ট হয়ে যায়। এমন কি আজকাল তমা শুভকে ফোন না দিয়ে চলে আসে ক্লাসে ওর সাথে বসে না। রবিনের সাখে বেশি দেখা যায়।ওদিন রাহাত বলে বসলো কিরে শুভ তর তমা কে আজ কাল রবিনের সাথে চাইনিজ রেস্টুরেন্ট এ দেখি।শুভর বুকটা মোচর দিয়ে ওঠে।তমা কে ও ফোন দিল। আজ ও তমাকে সব বলে দিবে কতটা ভালোবাসে ওকে। তমা কে আজকাল campus এ দেখা যায় না। রবিনের সাথে সারা দিন ঘুরে বেড়ায়।খুব আনন্দে দিন কেটে যাচ্ছে ওর।হঠাত্ তমার ফোন বেজে উঠে। hello শুভ আমি একটু ব্যাস্ত আমি তোকে পরে ফোন দিচ্ছি বলে ফোন কেটে দিল। শুভ চুপ করে আছে কিছু বলতে পারলো না রাতের ফোনের জন্য প্রহর গুনছে রাতের খাবার খেয়ে শুভ ওর বিছানায় চলে গেছে মোবাইলটা ধরে ও রেখে দিল । মনে মনে ভাবছে তমা আর ফোন দিবে না তাই ও শুয়ে পরলো।ভেবে ছিল আজ মনে না বলা কথা গুলো এক এক করে বলবে।ওর জন্য কতটা ভালবাসা জমা পড়ছে এই হ্রদয়ের মাঝে ।তমা কি আমাকে ফিরিয়ে দিবে।দিতে ও পারে কারন ওরা অনেক ধনী আমার সাথে যায় না।এ সমাজ তা মেনে নিবে না।এসব কথা গুলো আজ অনেক বেশি ভাবছে ছেলেটা। আমি গ্রামের ছেলে বাবা কত কষ্ট করে আমার লেখাপড়ার খরচ চালায় আরো কত কি আজ ওর মাথায় ঘুড়ছে।না না হয়তো তমাও আমাকে ভালোবাসে।ও আমার জন্য অনেক করেছে। কেন করেছে আমাকে ভালবাসে বলেইতো।সব কথা কি বলতে হয় ও তো বুঝবে আমি কতটা ভালোবাসি ওকে। ঠিক মাঝ রাতে তমা ফোন দিল। কিরে ঘুমিয়ে গিয়েছিস? না আমি ঘুমাইনি পড়ছিলাম। আচ্ছা তুই সকালে ফোন দিয়েছিলি? কি জানি সিরিয়াস কথা আছে বল। শুভ কথা বলতে পারছে না। উল্টো তমা বলছে আচ্ছা শুভ তোকে আজ একটা কথা বলি রবিন কে তর কেমন লাগে? হুম ভালো কেন কি হয়েছে? রবিন কে আমি ভালোবাসি ও আমাকে অনেক ভালোবাসে।জানিস না আজকাল আমারা সারাদিন ঘুরেবেড়াই আরো কত্ত মজা করি তোকে বলে বোঝাতে পারবো না। আমি অনেক HAPPY। শুভর বুকটা কেঁপে উঠলো গলাটা কে যেনো চেপে ধরে আছে কোন কথা আসছে না।কে যেন বুকে পাথড় বসিয়ে দিচ্ছে।আর কি বলবে ও কিরে চুপ হয়ে গেলি কেন।তুই খুশি না। বলতো আমাদের জুটিকে কেমন লাগবে? হুম তোদের খুব সুন্দর মানিয়েছে। কথাটা বলতে ওর গলা কাঁপছে হয়তো চোখের কোনে জল জমে আছে।কিন্তু তমা কি বুঝতে পারছে।হয়তো না। এগুলো বুঝার মত এখন ওর সময় নেই।তমার চোখে এখন রঙ্গিন স্বপ্ন।শুভ কখনো পারবে না ঔ স্বপ্ন ভেঙ্গে দিতে। এই শোন রবিন ফোন দিয়েছে এখন রাখি। তমা ফোন কেটে দিল। এখন মাঝ রাত শুভর হয়তো খুব কষ্ট হচ্ছে।কিন্তু তার খবর নেয়ার কেউ নেই।একদিন এই তমা ও বুঝতে পারতো শুভর অব্যক্ত মনের যত কথা। তবে আজ কেন বুঝতে পারে না? কল্পনা থেকে থেকে শুভ বাস্তবে ফিরে আসে।নিজেকে গুটিয়ে নেয়ার জন্য ও প্রস্তুত।আজ তমা ওকে বলে দিয়েছে আর কথা হবে না।তবে গাদিটা কি কান্না করছিল নাকি ও ভাবছে। না ও কান্না করবে কেন।ওরতো এখন সুখে থাকার দিন।আমার সাথে কথা না বলে যদি ওর ভালো হয় তবে তাতে আমি খুঁশি।শুভ ভোরের জন্য অপেহ্মা করছে।এই শহরে হয়তো আজই ওর শেষ রাত।শুভ ভেলকনিতে দাঁড়িয়ে আকাশটা কে দেখছে।এই শহরের আকাশটা কে আজ ওর অচেনা লাগছে।আধো আধো চাঁদটা শেষ আকাশে চলে গেছে।তারা গুলো আজ একা একা লাগছে।পরিবেশটা কেমন অপরিচিত লাগছে।একটু পরে চারিদিকে আলো ছড়িয়ে পরবে।সবাই ব্যস্ত হয়ে পরবে।ঘরের তালাটা আর একবার দেখে নিল শুভ সাথে একটা চিঠি রেখে গেছে ওর রুমমেট করিরের জন্য।একা একা হেটে যাচ্ছে ও।একটি রিক্সা নিয়ে কমলাপুর চলে গেল।ট্রেন এর জন্য বেশি সময় অপেহ্মা করতে হয়নি।এই শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছে ও হয়তো আর কখনো ফিরে আসবে না এই ছেলেটি।কেন ফিরে আসবে কার জন্যে ফিরবে? এখানে থাকলে অনেক কষ্ট পেতে হবে তাই চলে গেল কাউকে কিছু না বলে। দেখতে দেখতে কেটে গেলো ১৪ বছর তমার সাখে কোন যোগাযোগ নেই শুভর।শুভ এখন কাশিপুর প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিহ্মক। বাবা মারা যাবার পর সকল দায়িত্ব কাঁদে নিয়েছে।ছাত্র/ ছাত্রীদের কাছে ও খুব প্রিয়।ইদানিং স্কুলের সবাই ব্যাস্ত কয়েক দিনের মধ্যে শহর থেকে পরির্দশক আসবে।স্কুল ছুটির পরে শুভ বাড়ি ফিরে যাচ্ছে ওর কাঁদে একটি ব্যাগ এখন চশমাও পরে চোখে কম দেখে।হঠাত্ রাস্তার পাশে একটি বাবলা গাছ দেখতে পেয়ে ও থমকে দাঁড়ায়।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সেদিকে।কলেজ জীবনের কথা গুলো ওর মনে পড়ে যায়।প্রতিদিন তমার সাথে বসে আড্ডা দিতো সারা দিন ঘুরে কাটিয়ে দিত।এক এক করে আজ সব মনে পড়ছে ওর।অনেক দিন হল তমাকে দেখে না।যার সাথে কথা না হলে ওর ঘুম হতো না।আজ ১৪টি বছর তাকে ছাড়া কাটিয়ে দিল।তমার কথা আজ বড্ড বেশি মনে পড়ছে।ওকে একটু ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করছে।আচ্ছা এখন তমা দেখতে কেমন ও কি চশমা পড়ে? চশমা পড়লে ওকে দারুন লাগতো কিন্তু ও পড়তো না অনেক বলেছি কাজ হয়নি।আচ্ছা ওর কি চুল পেকে গেছে আমার মত? আমাকে কি সত্যি ভুলে গেছে তমা।ওকি আমাকে খোঁজেছিল? শুভ বাস্তবে ফিরে আসে।ভাবছে তমা এখন রবিনের কাছে অনেক সুখে আছে।ও রবিন কে ভালবাসে।এই মেয়েটা খুব গোছালো নিশ্চই নিজের সংসার টাকে গুছিয়ে নিয়েছে।তমা কি মা হয়েছে ওরতো ইচ্ছে ছিল একটি মেয়ে সন্তানের মা হবে।আচ্ছা ওর মেয়ে আমাকে কি মামা বলে ডাকবে? পেছন থেকে রনি এসে শুভ কে ডাকলো বাবা বাবা এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন বাড়ি যাবে না? রনির হাত ধরে শুভ বাড়ি চলে যায়। রনি কে নিয়ে শুভর ছোট্ট সুখের সংসার। রাতের খাবার খেয়ে দুজন ঘুমিয়ে যায়। কাল শহর থেকে বড় অফিসার আসবে স্কুল পরির্দশন করতে। এখন খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে যায় তমা ১৪ বছর আগের অভ্যাস নেই দেরি করে ঘুম থেকে উঠার।এখন ওর দায়িত্ব অনেক মাকে নিয়ে ছোট্র সংসার।অফিসের জন্য তেরী হচ্ছে ও এখন শিহ্মা বিভাগের উচ্চপথস্থ কর্মকর্তা।স্কুল পরির্দশনে আজ ঢাকার বাইরে যেতে হবে।নাস্তা করে ও মা কে বলে চলে যায়। ঢাকা থেকে অনেক দূরের পথ কাশিপুর প্রাইমারি স্কুল। ওদের গাড়িটি এখন গ্রামের পথ দিয়ে যাচ্ছে।এই পরিবেশটা ওর মন কেড়ে নিচ্ছে ইচ্ছে করছে গাড়ি থেকে নেমে যেতে তবে পারছে না। তমার পূরনো দিনের কথা মনে পড়ছে।শুভ মাঝে মাঝে ওকে নিয়ে যেতো শহর থেকে দুরে এমনি কোন খোলা পরিবেশে।হঠাত্ শুভর কথা মনে হতেই ওর বুকটা কেঁপে উঠে।শুভ নামের ওই স্বার্থপরটা কে ও ভুলে গেছে।যে ওর জীবন থেকে চলে গেছে কিছু না বলে তার কথা কেন ও মনে রাখবে। শুভ কেন চলে গেলো তার কারন আজও অজানা রয়ে গেছে।শুভর চলে যাবার খবরটা শুভর এক রুমমেট তমা কে দিয়েছিল।পুরো শহর জুরে খুজেছে তমা শুভ কে।কোথাও পায়নি ওকে।সেদিন তমা অনেক কান্না করেছিল।শুভর অনুপস্থিতি ও কে অনেক আঘাত করেছে আজও করে হয়তো। কি ভাবে পারলো ও তমাকে ভুলে থাকতে।সেদিন তো শুভ কে তমার খুব প্রয়োজন ছিল।তমা খুব একা হয়ে গিয়েছে। রবিন ওর সাথে প্রতারনা করেছে।তমাকে রবিন ভালোবাসেনি ওর সাথে ছলনা করেছে।রবিন উচ্চবিত্ত পরিবারের বলে যা ইচ্ছা তাই করতে পারলো।তমার সরল মনটা নিয়ে ও ছিনিমিনি খেলেছে।তমার মন কে নয় ওর রুপের দিকে রবিনের লোভ ছিল।নিজের কার্য হাসিল করে রবিন চলে গেছে।অথচ এর প্রতিবাদ করতে পারলো না ওর পাশে কেউ ছিলনা। শুভর প্রতি ওর বড্ড অভিমান রয়েছে।গাদাটা আমাকে ভালোসাতো আথচ কখনো তা বলতে পারেনি।যদি একবার বলতো তা হলে হয়তো আমার জীবনটা আরো সুন্দর হতো।এমন কিছু হতো না।ওকে তো আমারও ভালো লাগতো কিন্তু গাদাটা বুঝতে পারলো না।ও পাশে থাকলো তো আমার এ পরিনতি হতো না। গাড়িটি হঠাত্‍ একটি ঝাঁকুনি খায়।তমা বাস্তবে ফিরে আসে।চোখের কোনায় জমে থাকা জলটুকু আঁচল দিয়ে মুছে নেয় ও।স্কুলের মাঠের সামনে ওদের গাড়িটি থামলো শুভ ক্লাস নিচ্ছিলো পরিদর্শক এসেছে জানতে পেরে ও চলে আসে।শুভর হাতে স্কুলের পিয়ন একটি ফুলের তোরা ধরিয়ে দিল।মেডাম কে বরন করে নিতে।শুভ ফুল নিয়ে দাড়িয়ে আছে।দুজন মানুষ আজ এতো কাছাকাছি আথচ কেউ কাউকে দেখছে না।তমা গাড়ি থেকে নেমে আসছে।ওর মাথার কাপড়টা ঠিক করে নিলো।শুভর কাছ থেকে ফুল নিয়ে ও সামনে চলে যাচ্ছে।তবে মনে হচ্ছে তমার পা সামনে এগুচ্ছে না।তমা কি শুভকে চিনতে পেরেছে….. শুভ কে যদি চিনে থাকে তমা তাহলে ও ঘোমটা দিয়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখলো কেন।একবার ও কি শুভকে নিজের পরিচয় দিতে পারতো না।কেন বলছে না আমি তোর তমা। এখন শুভর ভেতরটা কেমন যেন লাগছে।যথন ও তমার সাথে বাবলা গাছের নিচে পাশাপাশি বসে থাকতো আজ ঠিক সেই অনুভুতিটা লাগছে।কেন? একসাথে মিটিং হচ্ছে আথচ তমাকে দেখতে পারছে না শুভ।তমা যতটা সম্ভব নিজেকে লুকিয়ে রাখছে আর শুভর দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে।শুভ বুড়ো হয়ে যাচ্ছে চুল পেঁকে যাচ্ছে চশমা নিয়েছে।এই ফ্রেমের চশমা তমা ওকে পছন্দ করে দিয়েছে।গাদাটা এই গরমে কাঁদে একটা শাল রেখেছে কেন? চুলে কি একটু কলপ দিতে পারে না।এখনো ঠিক অগোছালো রয়ে গেলো। তমার এক কলিগ বলছে মেডাম মিটিং এখানে শেষ। তমা এতোটা সময় কল্পনায় ছিল। একটু পর তমা চলে যাবে। দুজন মানুষ আজ এতো কাছে তবু দেখা হচ্চে না।আজও একে অন্যের প্রতি অঘাত ভালোবাসা রয়েছে।অপ্রকাশিত রয়ে গেল তমা সাহস করে ওর কলিগ কে বলছে ও প্রধান শিহ্মকের সাথে একটু আলাদা কথা বলবে।শুভ ও তমা এখন সামনা সামনি বসে আছে।তমা ওর ঘোমটা সরিয়ে দিল।শুম এক দূষ্টিতে তাকিয়ে আছে। চিন্তে কষ্ট হচ্ছে তবুও চিনতে পারলো। কাঁপা কাপাঁ গলায় বলছে। আপনি তমা? হুমম আমি তমা! চিনতে কষ্ট হচ্ছে তাই না আমি তো বুড়ি হয়ে গেছি ? ভালো আছো? হুম তুমি আমিও গ্রামে এসে মাস্টার হলে যে? বাবার হাতে গড়া স্কুল মারা যাবার আগে আমাকে দায়িত্ব দিয়ে গেলো।তা পালন করছি। …… ……….. এমন সময় রনি এসে শুভ কে বলছে বাবা দাদি তোমার খাবার পাঠিয়েছে। তোমার ছেলে? তাহলে বিয়ে করেছো। রনিকে তমা বুকে টেনে নেয়।তমার খুব কষ্ট হচ্ছে। তোমার বউ কেমন আছে? সবাই ভালো আছে। আর তোমার পরিবার ? তমার বুক কেঁপে উঠে। ভেজা চোখে উওর দেয় ভালো। তমা আর এক মূহুর্ত থাকতে চাইছে না।বিদায় নিয়ে চলে যাচ্ছে। তমা চলে যাবার পর শুভর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।এই প্রথম তমাকে মিথ্যা বলেছে ও।রনি শুভর ছেলে না।রনি কে কুড়িয়ে পেয়েছে ৩বছর বয়সে এখন রনি শুভকে বাবা বলে ডাকে। স্কুলের পিয়ন এতোহ্মন সব শুনেছে তমা সম্পর্কে ও সব জানে।স্যার মেডাম কে মিথ্যা বললেন কেন?অপনি তো বিয়ে করেন নি। তমা এখন রবিনের কাছে সুখে আছে।তাই আমার কথা ওকে জানালাম না।হয়তো ও মনে কষ্ট পাবে। তমা চলে যাচ্ছে।আর ভাবছে শুভ ঠিক কাজ করেছে।ও সুখে থাক রবিনের কথা জানতে পারলে গাদাটা কষ্ট পাবে।তাছাড়া ওর এখন সংসার আছে সন্তান আছে কি লাভ আমার কথা বলে।শুভ তাই ভালো থাক……….. তমা চলে যাচ্ছে এ জীবনে হয়তো শুভ ওকে আর দেখতে পাবে না।একটি বার বলতে পারলো না তমাকে আজও কতটা ভালোবাসে।এ জনের চাওয়া গুলো নিরবে ঝড়ে যায়।কিছু মানুষ না পাওয়া কে পাওয়া হিসেবে মেনে নেয় শুভ তাদের দলে।তমা ভালো আছে যেন ওর ভালো লাগে।হয়তো ঐ দিন কষ্ট পাবেন যেদিন তমা দুঃখে থাকবে। পিওন করিম মিয়া শুভর কাছের একজন মানুষ।সে বুঝতে পারছে শুভর অনেক কষ্ট হচ্ছে তবে মনের কথা চেপে রাখলো কেন একটিবার জানানো দরকার ছিল তমা কে যাকে ভালোবাসে বলে আজও বিয়ে করেনি।করিম বসে থাকার লোক নয় আজ একটা কিছু সে করে ছাড়বে। তমা গাড়ি উঠে যাচ্ছে।উঠার আগে চারপাশটা ভালো করে তাকিয়ে দেখছে।মাঠে রনি খেলা করছে।করিম মিয়া ছুটে যাচ্ছে তমার দিকে ঝড়ের বেগে। আপনি তো শুভ স্যারের বান্ধবি তমা? তমা কিছুটা চমকে গেলো এই লোক জানলো কি করে। হ্যা আমি তমা।কিছু বলবেন? হ্যা আপনাকে অনেক কিছু বলার আছে। তমাকে সব কিছু খুলে বলে করিম মিয়া।তমার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।কি করবে বুঝতে পারছে না।তবু এক দৌড় দিয়ে ছুটে যাচ্ছে শুভ কাছে।আজ হয়তো না গেলে সারা জীবনে যাওয়া হবে না।আশপাশের সবাই তাকিয়ে আছে অভাক হয়ে।ছুটে গিয়ে তমা শুভ কে ধরে কান্না করছে।শুভ কিছু বলতে পারছে না।

এখনো খুঁজি তোমায়

কবে কথন কিভাবে একে অন্যের fbতে বন্ধু
হয়েছে তার ঠিক কেউ জানে না বা জানতে ও
চায় না।ওরা খুব ভালো বন্ধু গত ২
বছরে একে অন্যকে খুব
ভালো করে চিনে ফেলেছে মুখ না দেখলেও
মনের ভাষা বোঝতে পারে।এক সময় এ বন্ধুত্ব
প্রণয়ে রুপ নেয়।একে অন্যের আত্তায় পরিনত
হয়।এই র্ভাচূয়াল জগতে সব স্বম্ভব।কেউ
কাউকে না দেখলে Onilne অস্থির হয়ে যায়
ওরা।
ও এখনো বলা হয়নি গল্পটি কাদের নিয়ে।সজিব
ও শান্তার কথা বলছি।ফেসবুক ওদের এক
করে দিয়েছে।নিজেদের জগত
ওরা নিজেরা গড়ে তুলেছে।সারা দিন গল্প
করে কাটায় ওরা।
সেদিন মাঝ রাতে শান্তার ফোন
পেয়ে সজিবের ঘুম ভেঙ্গে যায়। শান্তা:তোমার
সাথে break up
সজিব:আজব আমি কি করলাম
শান্তা:জানো না কি করেছো নেকা।মাঝ
রাতে আমার ঘুম ভাঙ্গাতে কে বলেছে তোমাকে
সজিব:ও আমি তোমার ঘুম ভাঙ্গালাম
না তুমি আমার ?
শান্তা:কি বললে আমি ?মোটেও না তুমি একটু
আগে স্বপ্নে এসে আমার ঘুম ভেঙ্গে দিছো যাও
কথা বলবা না আমার সাথে
সজিব:ও আচ্ছা সত্যি আমি এসেছিলাম
তা কি করছি তোমার সাথে যে ঘুম
ভেঙ্গে গেলো?
শান্তা:ফাজিল যাও ঘুমায়ও (ট্যুট ট্যূট ফোন
কেটে গেলো)
*****
শান্তা:আচ্ছা সজিব আমরা বিয়ে করবে।
সজিব:কোন দিন না
শান্তা:কি বললে তুমি?
সজিব:হুম আমরা সারা জীবন প্রেম করবে
শান্তা:ও আচ্ছা তাই ।সজিব
আমাকে সারা জীবন এমন ভাবে ভালোবাসবে?
সজিব:না পারবো না
শান্তা:কেন?
সজিব:আমি এর চেয়ে বেশি ভালোবাসবো
শান্তা:আচ্ছা তুমি আমাকে এতো বালোবাসো কেন ?
সজিব:সজিব ভালোবাসতে জানে কারন
জানে না
শান্তা:Ummmmma LOVE U
সজিব:LOVE U TOO
*******
শান্তা:শোন বিয়ের পরে তুমি FB
চালাতে পারবে না আমি একা চালাবো
সজিব:আমি কি দোষ করলাম
শান্তা:বলছি চালাতে পারবা না তো পারবা না এতো কথা কেন
বলছো
সজিব:আচ্ছা ঠিক আছে চালাবো না
শান্তা:আমি FB চালাবো আর
তুমি আমাকে জড়িয়ে ধরে থাকবে
সজিব:জড়িয়ে থাকতে হবে কেন?
শান্তা:আমি বলছি তাই।আচ্ছা আজকাল
এতো বেশি কথা বল কেন
সজিব:আচ্ছা আর বলবো না
শান্তা:আর শোন বিয়ের পর
আমাকে একটা মেয়ে BABY এনেদিবে
সজিব:আমি কোথায় পাবে?
শান্তা:তোমাকে বেশি কথা বলতে না করছি না।
আমি চেয়েছি তুমি এনে দিবা আর কিছু
আমি জানি না।
সজিব:আচ্ছা দিবো
শান্তা:ummmmma LOVE U
সজিব:ME2
শান্তা:তোমাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করতাছে।
সজিব:আমার ইচ্ছে করছে খুব
শান্তা:আমার Pic তো দেয়া আছে কিন্তু তোমার
তো fb তেpic নাই
সজিব:যেদিন তোমার সাথে দেখা হবে ও দিন
আপলোড করবে
শান্তা:কবে দেখা করবো আমরা ?
সজিব:তুমি যেদিন বল
শান্তা:সামনে তো আমার জন্মদিন চল ও দিন
দেখা করি ?
সজিব:আচ্ছা ঠিক আছে
শান্তা:এই যে জনাব আমার বেশি সামনে আশার
চেষ্টা করবেন না তা হলে খবর আছে
সজিব:ওমা তোমার হাত ধরতে পারবো না
শান্তা:না পারবা না ।আমার চোখের দিকেও
তাকাতে পারবা না
সজিব:কেন ?
শান্তা:আমাল লজ্জা লাগবে
সজিব:ইস আমার লজ্জাবতী টা রে
শান্তা:তো আমার কি
সজিব:আমরা কিন্তু সারাদিন হাঁটবো
শান্তা:না পারবো না
সজিব:কেন?
শান্তা:আমার পা ব্যাথা করে বেশি হাঁটলে
সজিব:ওকে আমরা রিক্সায় ঘুরবো।
শান্তা:আর শোন রিক্সায়
আমাকে ধরে বসতে পারবা না
সজিব:তোমার হাত ধরতে পারবো না কিন্তু
কেন ?
শান্তা:আমি চাই যেদিন তুমি আমার হাত
ধরবা সারা জীবনের জন্য ক্ষনিকের জন্য না
সজিব:ummmma love u.
শান্তা:me2
আজ ১২ ডিসেম্বর শান্তার জন্মদিন।দীর্ঘ ২
বছর পর একে অন্যের
সাথে বাস্তবে দেখা করতে যাবে।দুজনের
পূর্বপ্রস্তুতি।শান্তার জন্য সজিব
মাঝে মাঝে এটাওটা কিনেছে তা আজ নিয়ে যাচ্ছে।ওদিকে শান্তাও নিজেকে নিয়ে আজ ব্যাস্ত।ঘুম থেকে উঠেই লেগে পরেছে নিজেকে সাজানোর ব্যার্থ চেষ্টা ।ফুলকে যেখানে রাখা হোক তা ফুল ই থাকবে।শান্তা ঠিক তাই।
শান্তা কে ডানা কাটা পরী বলা যায়।একটা মানুষ কে সৃষ্টিকর্তা অকৃপণ ভাবে সাজিয়ে দুনিয়াতে পেরণ করেছে তা শান্তা।ওকে নিয়ে বর্ননা করার উপমা আমার নেই।
কবির ভাষায়
“‪#‎অর্ধেক_মানবী_তুমি_অর্ধেক_কল্পণায়‬”
হতে পারে সজিবের দেখা সর্ব শ্রেষ্ট মানবী শান্তা।
ছেলেটার ভাগ্য আছে বটে এমন
একটা মেয়ে পেয়েছে জীবনে।
আচ্ছা বলা হয়নি সজিব কম কোন দিক দিয়ে।
দেখতে শোনতে মাসআল্লাহ খারাপ না কোন
মেয়ে চোখ সরাতে পারবে না।
বলা যায় শান্তা সজিব একে অন্যের জন্য সৃষ্টি
শান্তা কালো রঙ্গের শাড়ি কপালে লাল টিপ
চোখে কাজল দিয়েছে কাজল
পড়তে বলেছে সজিব ।শান্তা এখন
বসে আছে পার্কের একটি বেঞ্চে।সজিবের
প্রিয় রজনীগন্ধা ফুল হাতে।১১টায় আসার
কথা সজিবের এখন ১১:৩০ বাজে।শান্তার খুব
জিদ লাগছে তবে খারাপ লাগছে না ।
মনে মনে ভাবছে ও
এলে আচ্ছা করে বকে দিবে ।
না না বকা দিলে হবে না এই পার্কে কান
দরে উঠবস করাবে ওকে।
সময় চলে যাচ্ছে সজিবের পাত্তা নেই এখন
১২টা বাজে।
শান্তা কিছু বুঝতে পারছে না কি করবে ।
আশপাশের সবাই তাকিয়ে আছে তাই ফুল
গুলো লুকিয়ে রেখে দিয়েছে পার্সে।সেই কথন
থেকে ফোন দিয়ে যাচ্ছে ফোন বন্ধ।সকালে ও
কথা হয়েছে।
শান্তা ভাবছে হয়তো ব্যাটারি র্চ্যাজ শেষ।
সময় গড়িয়ে এখন ৩টা বাজে সজিবের খোঁজ
নেই।
শান্তা কান্না করতে করতে বাড়ি চলে গেলো।
সজিব কেন আমার সাথে এমন
করলো আমি তো কোন অপরাধ করিনি।
চোখ মুছতে মুছতে বাড়িতে এসেছে শান্তা।
ওর রুমে যাবে ঠিক তখন ওর বাবা ওকে ডাক
দিলো ড্রয়িং রুমে।শান্তা মা টিভি টা একটু
চালু করে খবরের চ্যানেল টা দাওতো।

‪#‎ব্রেকিং_নিউজ‬::হরতালে পিকেটার দের
আঘাতে ও বাসে অগ্নিদগ্ধ হয়ে এক যুবকের মৃত্যু

শান্তা খবরটি দেখেছিল কিন্তু কথনো জানতে পারবে না এই যুবকটি ছিলো ওর সেই সজিব।যাকে সে এতোটা ভালোবেসেছে না দেখে।জীবনের সবগুলো স্বপ্ন একেঁছে নানা রঙ দিয়ে সজিব কে নিয়ে।তার পবিত্র ভালোবাসা দিয়ে।
শান্তা হয়তো সজিব কে ঘ্রিনা করতে পারবে না তবে ও এখনো আশায় আছে সজিব কে খুঁজে পাবে এবং একটি প্রশ্নের উওর
“কি দোষ ছিল আমার?”

টিফিন

কত বিচিত্র ঘটনা নিয়ে আমাদের জীবন
চোখে না দেখলে ধারনা করা যায় না।এই
শহরের একটি স্কুলের ৩য় শ্রেণীর
ঘটনা প্রতিদিন টিফিনে অভির আম্মু ওকে নিজ
হাতে টিফিন খাইয়ে দেন।দামিদামি সব ফুড
নিয়ে আসে ওর মা।ও খেতে চায় না তবু জোড়
করে নানা ভাবে বুঝিয়ে সব
খাবারা খাওয়াতে চায়।অর্ধেক খায়
বেশি অর্ধেক নষ্ট করে।ওর ঠিক
পাশে একটি ছেলে বসতো ছেলেটি প্রতিদিন
নিজের টিফিন বক্সের
দিকে তাকিয়ে থাকতো কিন্তু নিজের টিফিন
খেতে কখনও কেউ দেখেনি।অভি কে যখন ওর
আম্মু টিফিন খাওয়ায় ছেলেটি প্রতিদিন
তাদের দিকে তাকিয়ে থাকতো আর কি যেন
চিন্তা করতো কেউ জানতে চায়নি তা কখনও।
রোজ রোজ এই ঘটনায় অভির মা বিরক্ত
হয়ে ওঠেছে এবং স্কুল কমিটির কাছে অভিযোগ
করেছে।তবুও কাজ হয়নি ছেলেটা এখনও ওদের
দিকে তাকিয়ে থাকে।একদিন অভির পেট
ব্যাথা করে তাতে ওর আম্মা ঔ
ছেলেটিকে মারধর করে ওর সব কিছু বেঞ
থেকে ফেলে দেয়।এ ঘটনায় অন্য সবাই
এসে ছেলেটি কে উদ্দার করে।
ছেলেটি কে প্রধান শিহ্মক জিঙ্গাসা করলো
আচ্ছে বাবা তুমি প্রতিদিন ওদের খাবারের
দিকে তাকিয়ে থাকো কেন?তোমার
বাসা থেকে টিফিন দেয়নি
ছেলেটি কিছু বলছে না চুপ করে আছে।
কি হল বলছো না কেন?
আমি দেখি
কি দেখ ?
মা কে দেখি
কেন?
বাবা বলেছে আমার মা ঔ আকাশের
তারা হয়ে গেছে।অভির মা যখন ওকে টিফিন
খাইয়ে দেয় তখন আমার ও মায়ের
হাতে খেতে ইচ্ছে করে।তাই আমার টিফিন
না খেয়ে ওদের দেখি।আমার আর
খেতে ইচ্ছে করে না।
ছেলেটি কথা গুলো বলছে আর প্রধান শিহ্মকের
চোখ দিয়ে পানি পড়ছে।সে আর কিছু
জিঙ্গাসা করতে পারলো না।
একটু পর গেটের সামনে গাড়ির হর্ণ
শুনে ছেলেটি ছুটে গেল ওকে নিয়ে গাড়িটি ও
চলে গেল।
ছেলেটির পরে থাকা ব্যাগের সামনে প্রধান
শিহ্মক গেলো ওর টিফিন বক্সটির
দিকে তাকিয়ে আছে সেখানেও অনেক
দামিদামি খাবার ছিল।
এ ঘটনার পর থেকে ঔ ছেলেটিকে আর
স্কুলে দেখা যায়নি